গল্প :- বাসর ঘরে কি আছে?

64966

গল্প :- বাসর ঘরে কি আছে?
……


আমরা শপথ করেতিছি যে,কেউ কোনো দিন
প্রেম করবো না। কখনো কোনো মেয়ের
দিকে ভুলেও তাকাবো না। এবং সবসময়
সিঙ্গেল থাকবো। কেউ যদি ভুলেও প্রেমে
পড়ে তাহলে তাকে ফ্রেন্ড লিষ্ট থেকে
ব্যান্ড করে দেয়া হবে। শাস্তি হিসেবে
আরো থাকছে তাকে ফেসবুক থেকে একদম
ব্লক।হাত মেলাও
..
সবাই হাত মেলালো। সবাই বলতে আমরা
চার বন্ধু। ,রুদ্র,প্রিন্স,নিলয় & সিহাব। মানে
আমি । সেই ছোট কাল থেকেই আমাদের
বন্ধুত্ব। কখনো কেউ কাউকে ছেড়ে যাইনি।
এমন কি কলেজের গন্ডি পেরিয়ে যখন সবাই
ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম তখনো আমরা এক
সাথে ছিলাম। কিন্তু আজ আমরা একসাথে
নেই। নিশ্চুই প্রশ্ন জাগছে কেনো নেই ..?
সে ঘটনাই আজকে আপনাদের বলবো।
..
বিবরণ সরুপ,,,
রুদ্র:-রুদ্র হচ্ছে সহজ সরল হাবা গোবা একটি
ছেলে। দেখতে শুনতে বেশ ভদ্র আর দামরা
গরুর মতো মোটুরাম। তবে সালা একটু
লুইচ্ছা। চোখে চশমা পড়ে। তাই তারে
সবাই ভদ্র মনে করে। রাস্তায় কোনো
মেয়ে দেখলেই এক দৃষ্টিতে হ্যাঁ করে
তাকিয়ে থেকে ফুল স্কান করে ফেলে।
কিছুদিন হলো সে একটা মেয়ের জুতার
বারি খেয়েছে। তাই তিনি এখন এই শোকে
কাতর।
..
প্রিন্স:- নামটা শুনে রাজা বাদশা মনে
হলেও সালা একটা সেই লেভেলের ফকির।
ফকির বললে ভুল হবে। ফকিরের চেয়ে বড়
ফকির। ফ্রেন্ডদের কে তো কখনো কিছু ট্রিট
দেয়নি। বরং পেলে আরো চেটে পুটে খেয়ে
আসতো। আমরা বাকি তিনজন কখনো তাকে
ভাঙ্গাতে পারিনি। তাই একদিন তাকে
ইচ্ছা করে পকেট মেরে পার্টি দিছি। বন্ধু
আমার এ জন্য আপাতত আমাদের সামনে
অভিমান করে বসে আছে।
..
নিলয়:- বড় লোক বাবার একমাত্র পোলা।
দেখতে অনেক কিউট। বাট একটু লাজুক।
মেয়ে পেটাতে ভীষণ অস্তাদ। ওহ সরি ভুল
বললাম। মেয়েরাই তাকে পটানোর চেষ্টা
করতো। নিলয় ভালো গান গাইতে পারে
তো। সাথে ভালো গিটারো বাজাতে
পারে। এর জন্যই হয়তো মেয়েরা তাকে
দেখে ক্রাশ খাইতো। কতো মেয়ে প্রেমের
প্রস্তুত দেয়। বাট আমাদের এই অসহায় বন্ধু
গুলোর চাদমাখা মুখখান দেখে না বইলা
দেয়। আসলে আমরাই তাকে করতে দেইনা।
কারন আমদেরর একটা শপথ করা হয়েছে
যেটা গল্পের শুরুতেই বলছি।
..
সিহাব:- নিজের প্রশংসা নিজে বললে
হয়তো অনেকেই বলবে বাড়িয়ে বলছি। তাই
আপাতত কিছু বলছিনা।

এই হলো আমাদের চার বন্ধুর সম্পর্ক। ঢাকা
সহরের ব্যাস্ত নগরীর কোনো এক ফ্লাটে
আমরা চার বন্ধু ভাড়া নিয়ে থাকি।
ব্যাচেলার দের জীবন যেরকম কাটে আর কি
ঠিক সেভাবেই আমাদের দিনগুলো বেশ
কাটতো। সারাদিন বাইরে ঘুরাঘুরি। মজ
মাস্তি,আড্ডা আর সন্ধ্যা হলেই সবব গুলা
একসাথে জড় হয়ে মোবাইল গুতা। এই ছিলো
আমাদের নিত্যদিনের কাজ।
..
মনুষের মন কখনো আটকা যায়না। এবং সেটা
সত চেষ্টা করলেও বেধে রাখা যায়না।
প্রিয় বন্ধু প্রিন্স। হলা যে এত্তো বড় নিমক
হারাম। হ্লারে সামনে পাইলে এহনি
কুপাইতাম।
ঘটনা হইলো গিয়া বন্ধু প্রিন্স অনেক আগে
থেকেই একটা মেয়ের লগে প্রেম করসে চুপি
চুপি। সালা আমাদের কখনো বলেনাই।
বলবে কেমন করে সাহসটাই তো পায়নাই।
..
প্রিন্স দেখি হাপাইতে হাপাইতে রুমে
ঢুকলো। তিনজনেই দেইখা অবাক….!
.
কিরে কি হইছে তোর এভাবে হাপাইতছোস
কিল্লাই ..? কোনো ভুতে দৌড়ানি দিছে
নাকি।(রুদ্র)
না দোস্ত .আর বলিস না ভাই আমার। আমি
একটা বড্ডো ভুল কইরালাকইছি রে ভাই।
তোগোর সাথে বেইমানি করছি। তোরা
আমারে মাফ কইরা দে। (কাদো কাদো ভাব
প্রিন্স)
.
ঐ মামুর বেটা দিনদুপুরে কি তোরে জিনে
ধরছে নাকি। কি বেঈমানী করছোস। খুইলা
বল দেহি..? (আমি)
.
দোস্ত আমি তোগরে না জানাইয়া একটা
মাইয়ার লগে প্রেম করছি। সেই কথা
তোদের বলিনাই। বললে তোরা আচতো
রাখতি না। কিন্তু একটা ঘটনা ঘইটা গেছে।
(প্রিন্স)
.
কস কি হ্লা। এতো বড় বেঈমানী। আমাগো
লগে ..? (নিলয়)
..
ঐ বেটা থাম। আগে হুনতে দে। তারপর কি
হইছে বল (আমি)
.
সেই মেয়ে আইসা আমারে ডাইরেক্ট থ্রেড
মারছে। আগামি তিনদিনের মধ্যে বিয়ে
না করলে সে তাদের বাসার ছাদ থাইকা
লাভ দিবো। এবং দোসি হিসেবে আমার
নামে ছুসাইড নোট লেইখা যাইবো।
আমারে বাচা দোস্ত। আমি বিয়া করুম না।
কেদেই দিলো প্রিন্স)
.
ঐ বেটা ঐ থাম। কাদোস কিল্লাই হ্লা।
(নিলয়)
.
তিনজনই পরে গেলাম মহা টেনসনে। কি
করবো ভাবতেছি। ভুল যেহেতু করছেই। তাই
শাস্তি হিসেবে বিয়েটা করতে হবে
তাকে। তবে একটা সর্ত। বাসর ঘরে ঢুকেই
পাচ মিনিটের মধ্যেই বের হয়ে আসতে হবে।
এবং আমাদের সাথে আড্ডা দিতে হবে।
বন্ধু আমার রাজি। কাজি এনে বিয়ে পড়ায়
দিলাম। বন্ধুর ফ্যামিলিরে বেপারটা খুলে
বলার সাথেই রাজি হইছে। যেহেতু মেয়ে
ভালো। বন্ধুর আজকে বাসর রাত। আমরা
নিচে ওয়েট করতেছি তার জন্য যেহেতু কথা
ছিলো বন্ধু পাচ মিনিটের মধ্যেই আমাদের
সাথে আড্ডায় মেতে উঠবে।
.
পাচ মিনিট গেলো। কুড়ি মিনট গেলো। এক
ঘন্টা,দুই ঘন্টা গেলো। বাট বন্ধু ঐ যে বাসর
ঘরে ঢুকলো আর ফিরা আইলো না।
এটা বড় নিমক হারামি ছিলো। তাকে এখন
ফোন করেও আর আমাদের সাথে পাওয়া
যায়না। বিভিন্ন অযুহাত দিতো। বউ পাইলে
যেটা হয় আর কি।
..
রুল অনুযায়ী তাকে ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে
ডিলেট। এবং ব্লক। নতুন রুল চালু হলো।
..
নিলয়:-প্রাইভেট মেডামের কাছে এক্সট্রা
টাইম পড়তো। মেডাম দেখতে সেই
লেভেলের কিউট আর সেক্সি ছিলো। আগেই
বলেছিলাম নিলয়ের উপর সব মাইয়ারাই
ক্রাশ খাইতো। আর মেডাম কেনো বাদ
যায়। তিনিও ক্রাশিতো নিলয়ের উপরে।
নিলয় হ্লাও মেডামের লগে পরোকিয়া শুরু
করলো। সরি পরোকিয়া বললাম এ কারনে।
যেহেতু মেডাম আমাদের বয়সে বড়। আর
মেডামের তখনো বিয়া হয়নি। তাই বড়
হওয়ার কারনে পরোকিয়া বললাম। আপনারা
আবার উল্টা পাল্টা বুইঝেন না।
..
তো এই পরোকিয়া করতে গিয়া বন্ধু আমার
গেলো ফাইসা। মেডামের লগে এক্সট্রা
কেয়ার মানে ইন্টু পিন্টু করতে গিয়া
মেডামের বাপের সামনে খাইলো ধরা।
তাই লোক লজ্জার ভয়ে পড়ায় দিলো বিয়া।
বন্ধু আমার রাজি না হইলেও বাসর ঘরে
গিয়ে খুশিতে আত্মহারা। যদিও প্রিন্স এর
মতো প্লান ছিলো পালানো। ফুল টেংকি
বাইকে তেল নিয়া আমি আর রুদ্র নিচে
ওয়েট করছি। বন্ধু ঐ যে ঢুকলো বাসর ঘরে আর
ফিরাও চাইলো না।
..
দোস্ত এই বাসর ঘরে কি আছে রে। যেই
হ্লায় ঢুকে আর বের হইতে চায় না ..? (রুদ্র)
.
খোদায় জানে রে দোস্ত একটা দীর্ঘশ্বাস
টান দিয়ে। (আমি)
..
এভাবে হারিয়ে গেলো দুই বন্ধু। এখন বন্ধু
বলতে রুদ্র আর আমি। আবার নতুন করে
নিয়োম।
.
দোস্ত আমি তোরে ভুলেও ছাইড়া জামুনা।
জীবন থাকতেও না।
দোস্ত এখন থাইকা আমরা দুইজন একলগে
চলমু। দুজন দু্জনের সব বিপদে এক সাথে
থাকবো। যতই ঝড় আসুক।(রুদ্র)
.
দুর হ্লা তোর যে দামরা বডি। ঘুির্নঝড়
আইলেও তোরে উরাইতে পারবো না।
হাহাহা (আমি)
..
রুদ্র আর আমার খুনশুটি বন্ধুত্ব বেশ ভালোই
চলছে। সারাদিন বিভিন্ন ট্রপিক নিয়ে
ঝগড়া,আর রাত হলেই এক হয়ে এক ফ্লোরে
ঘুমায় যাওয়া। বেশ চলছে।
কথায় আছে ভালো জিনিসটা বেশি দিন
স্হায়ি থাকেনা। এরিই মাঝে আমাদের
ফাইনাল ইক্সাম শেষ। তারপর ……
..
দোস্ত বাসা থেকে আব্বায় ফোন করছে।
আর বললো কোন এক বন্ধুর মেয়ের লগে বিয়া
ঠিক করছে। দোস্ত আমি এখন বিয়া করুম না।
আর বাসায় জামু না। গেলেই বিয়া দিবো।
নাও করতে পারুম না দোস্ত। (রুদ্র)
..
আংকেল রে বেপারটা খুলে বল। তুই এহন
বিয়া করবি না। (আমি)
.
তুই আমার বাপরে চিনোস না হ্লা। মাথায়
পিস্তল ঠেইকা হলেও বিয়া পড়াইবো। কিছু
একটা কর (রুদ্র)
.
অবশেষে দুজনের রুদ্রর বাসা গেলাম।
আংকেল রে বুঝানোর চেষ্টা করলাম।
অবশেষে দুইজন রে বাইন্দা আংকেল আমার
প্রান প্রিয় বন্ধুরে বিয়া পড়ায় দিলো।
..
রুদ্র বললো নিচে ওয়েট কর। সাথে একটা
ব্যাগ দিলো। নিচে গিয়ে ওয়েট করছি।
মাগার বন্ধু ঐ যে বাসর ঘরে ঢুকলো। আর
বাকিটা ইতিহাস।
.
পরের দিন বন্ধু আমায় পাঁচশো টাকার একটা
টিকিট কাইটা বাছে তুইলা দিয়ে বাড়ি
পাঠায় দিলো।।।।।।
..
এভাবেই ছেড়ে চলে গেলো আমার তিন
তিনটা প্রানের বন্ধু।
অবশেষে আমি আর কি করি ..? একটা ভালো
জব পেয়ে গেলাম। ভালো মাইনে।
বিয়া করার জন্য উপযুক্ত একটা পাত্র আমি।
.
দিনকাল ঠিক করে মহাধুম ধামে বিয়ে
করলাম। ইনভাইট করলাম হ্লার তিন
হারামী রে। হারামী তিনটা নিজ হাতে
আমার বাসর ঘর সাজিয়েছে। আজ আমার
বাসর রাত। ভিতরে লাল টুকে টুকে রমনী
বসে। বাট ভীতরে সেই লেভের নার্ভাস
ফিল হচ্ছে। বন্ধুরা জোর করে বাসর ঘরে
ঢুকায় দিয়ে বাইরে থেকে দিলো দরজা
লাগায়।

অবশেষে পরের দিন আবিষ্কার করলাম
বাসর ঘরে সেই লেভেলের পিওর মধু আছে।
যেটার জন্য হারামি তিনটা হারাইছে ।
হিহিহি।
বিঃদ্র,এটি একটি নাটক থেকে নেওয়া তাই কেও বাজে কমেন্ট করবেন না। হয়তো নাটকটা অনেকেই দেখছেন। ‎ লেখক-=সজীব কুমার to সুখপাখি vs সুখতাঁরা 

Leave a comment