চাচা ভাতিজা রম্য হাসতেই হবে

গার্লফ্রেন্ডের সাথে রিক্সায় করে যাচ্ছিলাম, গার্লফ্রেন্ড আমার সেই সুন্দরী। সুন্দরী প্রতিযোগিতায় মিস বাংলাদেশ না হলেও মিস চিটাগাং হবে এটা কন্ফার্ম।
গার্লফ্রেন্ডের মেহেদি রাঙ্গা কোমল হাত আমার হাতে নিয়ে বললাম আদিলে’র মা একটা গান শোনাও না। ও হ্যাঁ আদিল হলো আমাদের হবু ছেলের নাম।
আদিলের মা মানে আমার গার্লফ্রেন্ড মানে আপনাদের হবু ভাবি লজ্জা পেয়ে বললোঃ
.
–ইস্ আমার লজ্জা লাগে।
.
-গাও না বাবু।
.
–না লজ্জা লাগে।
.
-আহা এমন করেনা গাও না।
.
–না লজ্জা করে।
.
-তোর লজ্জার গুষ্টি কিলায় গান গা।
.
লজ্জাবতী গার্লফ্রেন্ড লজ্জা ভুলে এবার গান শুরু করলোঃ
“ওপান গানগাম স্টাইল ও ও ও ওপান গানগাম স্টাইল ওওও……”
.
একি রে বাবা, গার্লফ্রেন্ড আমার দিব্বি পুরুষালি গলায় গানগাম স্টাইল গান গেয়ে যাচ্ছে। শুধু কি ড্যান্স? সাথে রিক্সায় দাঁড়া হয়ে রীতিমত হুবহু গানগাম স্টাইল ড্যান্স দিচ্ছে।
ভয় পেয়ে গার্লফ্রেন্ডর হাত ধরে টেনে রিক্সায় বসানোর চেষ্টা করছি আর বলছিঃ
.
-আদিলে’র মা কি হলো তোমার, মিরগী বেরাম উঠছে নাকি, ও আদিলে’র মা…
.
ওপান গানগাম স্টাইল ও ও ও……
চোখ খুলে দেখি আমি বিছানায় শুয়ে আছি। ফোনটা বাঁজছে, ফোনের রিংটোন ওপান গানগাম স্টাইল…
সালার স্বপ্নে একখান গার্লফ্রেন্ড পাইলাম সেইডাও কপালে সইলোনা। আদিলে’র মায়ের জন্য আফসোস হচ্ছে, আমি তো স্বপ্ন থেকে বের হয়ে আসলাম বেচারি মনে হয় এখনো রিক্সায় দাঁড়িয়ে গান গাচ্ছে আর নাচতেছে। আহারে বেচারি আদিলের মা।
.
ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি নতুন নাম্বার। নতুন নাম্বার রিসিভ করতে এখন ভয় পাই। কালকেও রাতে এক নতুন নাম্বার থেকে কল আসছিলো, কল রিসিভ করতেই বলেঃ
.
–সালা কুত্তার বাচ্চা। তুই কুত্তা তোর বাপ কুত্তা তোর চৌদ্দগুষ্টি কুত্তা।
.
ফোনটা কেটে মাঝরাতে আব্বাহুজুরকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ফোনটা আব্বাকে দিলাম।
.
-আব্বাহুজুর কেডা জানি আমাদের বংশের সঠিক পরিচয় জানতে পেরেছে। ফোন দিয়ে প্রশংসা করতেছে। হেতে আপনারে খুঁজে। ফোনটা ধরে তাকে একটু ধন্যবাদ দেন।

আব্বাহুজুর ফোনটা কিছুক্ষন কানে ধরে রেখে যা বলা শুরু করলেন তা পোস্টে লিখা সম্ভব না। তওবা তওবা। না বাজে শব্দ ব্যবহার করেন নি, শালিন শব্দে এমন কিছু গালি দিয়েছেন যে ফোনের ওপাশের লোকটা ফোন কেটে ফোন বন্ধ করে দিছে। তারপর আসলো আমার পালাঃ

–কিরে তোরে কে এতো রাতে ফোন দিয়ে চৌদ্দ গুষ্টির ইজ্জত উদ্ধার করতেছে?
.
-চিনিনা আব্বা।
.
–ঠিকই চিনিস, নিশ্চই কোন টোকাইয়ের কাছে টাকা ধার নিয়ে ফেরত দিসনি। আর তোর সাহস দেখে অবাক না হয়ে পারছিনা, মাঝরাতে ডেকে তুলে আমার হাতে ফোন দিয়ে বলিস আমারে খুঁজে। তোর বিচার সকালে হবে এখন যা ঘুমা।
.
এই হলো কালকের ঘটনা, কিন্তু কথা হলো আজ কে কল দিছে। বুকে থুথু দিয়ে সাহস করে ফোন রিসিভ করে বললামঃ
.
-হ্যালো হারামজাদা স্পিকিং…
.
–বাবা…
.
-কেডা রে? সত্যি করে কইতাছি তোর আম্মার সাথে আমার কিচ্ছু ছিলোনা। আমি নাদান মানুষ।
.
–বাবা একটু উঠে বসেন, ঠান্ডা মাথায় শুনেন আমি কি বলি।
.
-বলেন।
.
–আমি জ্বীনের বাদশাহ্ হুনুলুলু…
.
-ঠাপ্পা কিধার হ্যায়?
.
–কি বলেন বাবাজি?
.
-বলি তুমি যে জ্বীনের বাদশাহ্ তার প্রমাণ কি? তোমার ঠাপ্পা কিধায় হ্যায়? প্যান্ট খুলো ঠাপ্পার ফটো তুলে এম.এম.এস করো।
.
–বাবাজি কি অবিশ্বাস করছেন?
.
-তুই ঠাপ্পা দেখা আগে। ঠাপ্পা কিধার হ্যায়?
.
–ঠাপ্পা তেরে পিছুমে হ্যায়।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো। এটা কোন কথা হলো? যার যখন ইচ্ছা কল দিয়ে মজা নিবে। তার বলা শেষ হলে ফোন কেটে বন্ধ করে রাখবে। মুই খেলুম না।
.
যাই হোক চার হাতপা চারদিকে তীরের মতো সোজা করে ঘুম দিলাম।
খুব ভোরে ঘুম ভাঙ্গলো, কে যেন দরজা ধাক্কাচ্ছে। ভাবলাম সত্যি সত্যি জ্বীনের বাদশাহ্ না তো, যদি সত্যি সত্যি ঠাপ্পা দেখাতে বা চেক করতে আসে।
নাহ্ জ্বীনের বাদশাহ্ না, আমার অতি আদরের ভাতিজা। কিন্তু সে এতো সকাল সকাল এসে ডাকাডাকি করছে কেন?
.
–চাচ্চু, তূর্য চাচ্চু, ও চাচ্চু, ওই চাচা… তূর্য চাচা… চাচা রে… চাচামিয়া… চাচ্চু…
.
ভাতিজার কোন ঠিক নাই মাথা গরম হলে সালা চাচা, কুত্তা চাচাও ডাকতে পারে তার আগে তাড়াতাড়ি উঠে দরজা খুলে দিলাম।
.
-কি রে তুই এতো সকাল সকাল ক্যান?
.
–বাড়ি থেকে আব্বু বের কইরা দিছে।
.
-ক্যারে?
.
–গার্লফ্রেন্ডের বাপেরে ধইরা পিডাইছি।
.
-ক্যারে?
.
–গার্লফ্রন্ডের বাপ কইলো আমার মেয়েকে ভুলে যাও বিনিময়ে আমার এটিএম কার্ড নাও।
.
-ওহ্ বুঝছি গার্লফ্রেন্ডরে ভুলে যেতে বলছি তাই পিডাইছস?
.
–নাহ্ এটিএম কার্ড নিছিলাম, তারপর দেখি সালার শশুড়ের একাউন্টে ৪২০ টাকা মাত্র।
.
-আচ্ছা আমার এখানে দুইদিন আত্মগোপনে থাক, শেল্টারের বিনিময়ে তিনবেলা হাত পা টিইপ্পা দিবি।
.
–আচ্ছা…
.
-এখন বস একটা বিড়ি খেয়ে আসি।
.
হেডঅফিসে বসে বিড়িতে টান দিচ্ছিলাম এমন সময় দরজায় টোকা।
.
–চাচ্চু…
.
-এখানে আসছস ক্যান? যা ঘরে যা। আব্বা দেখলে চাচা-ভাতিজা দুইডারে বাড়ি থেইক্কা বাইর কইরা দিবো।
.
–চাচ্চু বাহির হও আমি যামু…
.
-একটু অপেক্ষা কর বাপ।
.
–ওই চাচা তুই বাইর হবি?
.
বুঝছি বের না হলে ভাতিজা প্রয়োজনে দরজা ভেঙ্গে ফেলবে। বিড়ি ফেলে দিয়ে বের হলাম। বের হতেই দেখি আব্বা দাঁড়ায় আছে।

গল্পের বাকি অংশ – সম্পূর্ন গল্প এখানে 

Leave a comment